দেশের লাভজনক বড় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতিও আছে। চলতি বছরের মধ্যে এসব কোম্পানির আইপিও বাজারে আসতে শুরু করবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এ কথা বলেছেন।
নিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) যৌথ আয়োজনে ‘পুঁজিবাজার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান।
এতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ মনিরুজ্জামান সিএফএ।
বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বড় কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ইনসেপ্টা ও নেসলেসহ অনেক কোম্পানির সাথে বৈঠক করেছেন তিনি। বেশ কিছু কোম্পানি ইতিবাচক সাড়াও দিয়েছে। আবার কোনো কোনো কোম্পানি বলেছে, বুকবিল্ডিং পদ্ধতির বর্তমান বিডিং প্রক্রিয়ায় শেয়ারের যৌক্তিক (তাদের ভাষায়) দাম পাওয়া সম্ভব নয়। তাই তারা বাজারে আসতে আগ্রহী না। বিএসইসির পক্ষ থেকে তাদেরকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তারা যদি বাজারে আসতে চায়, তাহলে কেস টু কেস ভিত্তিতে আইনী শর্তে কিছু ছাড় দেওয়া যায় কি-না তা বিবেচনা করে দেখা হবে।
তিনি বলেন, ওটিসি মার্কেটে থাকা কোম্পানিগুলোকে সচল করার প্রক্রিয়া চলছে। বন্ধ থাকা ১৮টি কোম্পানি চালু হতে যাচ্ছে। কয়েকটি ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। এতে একদিকে এসব কোম্পানি শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হচ্ছেন। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতও লাভবান হচ্ছে। কারণ কোম্পানিগুলো বন্ধ থাকায় এতদিন ধরে ব্যাংক ঋণের কিস্তি বন্ধ ছিল। এসব কোম্পানি থেকে এখন সরকার নানারকম রাজস্বও পাবে। হবে নতুন কর্মসংস্থান।
তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে পুঁজিবাজারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের পুঁজিবাজার এখনো বিকশিত হয়নি। তাই সাময়িকভাবে হলেও এই বাজারকে সহায়তা করা প্রয়োজন। প্রণোদনার কারণে আপাতত কিছু রাজস্ব হারালেও এক সময় তা কয়েকগুণ হয়ে ফিরে আসবে। পুঁজিবাজারে যত কোম্পানি আসবে, এনবিআর তত লাভবান হবে।
বৈঠকে সম্মানিত আলোচক হিসেবে অংশ নেন- পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের চেয়ারম্যান ও সাবেক মূখ্যসচিব নজিবুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মোঃ জাহিদ হাসান, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খায়রুল হোসেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনূসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. এজাজুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আল-আমিন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি-রোজারিও, সিএফএ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট শাহীন ইকবাল, অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড ফান্ড এর প্রেসিডেন্ট ড. হাসান ইমাম, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর প্রেসিডেন্ট মামুনুর রশীদ এফসিএমএ ও ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএবি) এর কাউন্সিল সদস্য গোপাল চন্দ্র ঘোষ।
গোলটেবিল বৈঠকে বিএসইসি চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, কিছু দিনের মধ্যেই স্টক এক্সচেঞ্জে ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন চালু হবে। তখন একলাফে বাজারমূলধন অনেক বেড়ে যাবে। পর্যায়ক্রমে সুকুক এবং অন্যান্য বন্ডও বাজারে তালিকাভুক্ত হবে। তখন জিডিপি-বাজারমূলধনের অনুপাত বেড়ে ৫০ শতাংশষ দাঁড়াবে।